মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আলী ও তার প্রতিবন্ধী মেয়ে
কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) সংবাদদাতা,ক্রাইমনিউজ ৫২ //১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আলী (৭০)। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি তিনি । বর্তমানে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তার একটাই চাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন তাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন।
গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মধ্যরাজিব গ্রামের মৃত খয়ের উদ্দিনের পুত্র সুলতান আলীর নিজের বসতভিটার জমি না থাকায় তিনি ইসমাইল গ্রামে তার শশুর বাড়িতে ছোট একটি ছাপড়া ঘরে অবস্থান করছেন। এ সময় তাঁর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বাবা আমি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশমাতৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে প্রথমে ভারতের কুচবিহার মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ৬ নং সেক্টরে ২১ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ভারতের কুচবিহার হয়ে বাংলাদেশের পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা ও জলঢাকা উপজেলার কৈমারীতে যুদ্ধ করি।
ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সময় আমাদের প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন আব্দুল কুদ্দুস। যুদ্ধকালীন কমান্ডার ছিলেন মাহাতাব সরকার। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি রাইফেল চালিয়ে যুদ্ধ করেছেন। ভারতীয় তালিকায় ২২ নম্বর সিরিয়ালে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত আছে। যুদ্ধ শেষে তিনি নীলফামারীর নটখানায় অস্ত্র জমা দেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুর রহমান হাবুল বলেন, সুলতান আলী একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কোন কারণে আগে তাঁর নাম তালিকায় আসেনি তা আমার জানা নেই। কিন্তু বর্তমানে নতুন করে ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি তাঁর নামটি গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা সুলতান তিন কন্যা সন্তানের বাবা। বড় ও ছোট মেয়েকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বিয়ে দিয়েছেন। মেজ মেয়ে প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করে জীবন চালান। গত ২০১৪ সালের ৫ জুলাই কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণার পর তিনি কখনো বাহিরে গিয়ে ভিক্ষা করেন আবার কখনো অন্যের জমিতে শ্রমিকের কাজ করেন। বৃদ্ধ বয়সে তাঁকে কেউ শ্রমিক হিসাবে কাজে নিতে না চাওয়ায় ভিক্ষাই তাঁর একমাত্র পেশা। যুদ্ধকালীন সময়ে তাঁর সহযোদ্ধা ছিলেন, সামছুল হক, জফুর আলী, আব্দুল মজিদ।
Leave a comment
Comments 0