মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর মানবাধিকারকর্মী,কবি,সাংবাদিক আতিকআজিজের খোলা চিঠি

আতিক আজিজ

ক্রাইমনিউজ৫২, ডেস্ক রিপোর্ট :

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর খোলা চিঠি
কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, মানবাধিকার ও সংস্কৃতিকর্মীদের মাঝে ২ হাজার ৫ শত কোটি টাকার প্রণোদনা (আগামী তিন অর্থ বছর পর্যন্ত ) ঘোষণা করা প্রসংগে।
— আতিক আজিজ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, প্রথমেই আপনার সুস্বাস্থ্যা ও দীর্ঘায়ূ কামনা করছি।

মাননীয় জননেত্রী শেখ হাসিনা, ইতোমধ্যে আপনি ত্রাণের চাল আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উ”চারণ করেছেন। ইতোমধ্যেও বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপরও চলছে ত্রাণের চাল চুরি। অন্যদিকে, ত্রাণের দাবিতে চলছে বিক্ষোভ। বুধবার ১৫ এপ্রিল সকাল থেকে নভেল করোনা ভাইরাসের মহামারীর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেতনের দাবিতে রাজধানীর রাজধানীর আশুলিয়া, উত্তরা, বাড্ডা, ভাটারা, মিরপুর, ভাষানটেক, শাহআলি, তেজগাঁও, মতিঝিল এলাকায় শতশত শ্রমিক বিক্ষোভ দেখিয়েছে রাস্তায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনি ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার করোনা ভাইরাসের কোন উপসর্গ দেখা দিলে জনগণকে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং কোন গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদানও করেছেন।
দেশে করোনা পরিস্থিাতি ২৫ মার্চ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশে আপনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দিয়েছেন। সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস মোকাবেলাকে এবারের সংগ্রাম ঘরে থাকা এবং অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। কঠিন পরিস্থিাতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকা, গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণাসহ দিক নির্দেশনা মূলক ভাষণ দিয়েছেন যা- করোনা পরিস্থিাতি মোকাবেলায় আমাদের অনেক অনুপ্রেরণা ও সাহস যুগিয়েছে।
৫ এপ্রিল দেশের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে রবিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত ভাষণে আপনি ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার সার্বিক একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সোমবার রাতে ১৩ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে, যে সব স্বাস্থ্যাকর্মী প্রত্যক্ষভাবে করোনা ভাইরাস রোগীদের নিয়ে কাজ করছেন তাদের বিশেষ সম্মানী দিতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, গত ১৫ এপ্রিল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান গ্রহণকালে আপনি
বলেছেন, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অর্থনৈতিক অভিঘাত মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। শিল্প কলকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে সচল থাকে সে ব্যবস্থাাও নেওয়া হয়েছে। জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ এই বিশেষ প্রণোদনা খাতে এবার ব্যয় করা হবে। সেটা সর্বস্থারের মানুষ পাবে।

এছাড়াও আপনি বলেছেন, এই প্রণোদনা শুধু আজকের জন্য নয়, এখনকার যে সমস্যা সেটা সমাধান করা এবং আগামী তিন অর্থবছর পর্যন্ত যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়ন করা। আমাদের দেশের একেবারে নিম্নআয়ের মানুষ-আমাদের দিন মজুর শ্রেণি কামার-কুমার, রিকশাওয়ালা, ভ্যানওয়ালা থেকে শুরু করে ছোট ছোট দোকানদাররা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী-প্রত্যেকের কথাই আমরা চিন্তা করেছি এবং প্রত্যেকের দিকে লক্ষ্য রেখেই এই প্রণোদণার ঘোষণা দিয়েছি। সব শিল্প-কলকারখানা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে চালু থাকে। শুধু আজকে বাংলাদেশ বলে না, পুরো বিশ্বেই কিন্তু এর একটা প্রভাব পড়বে। সেজন্য বাংলাদেশকে সুরক্ষিত করার জন্যই আমরা খাদ্য উৎপাদনে বিশেষভাবে জোর দিচ্ছি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে, সুরক্ষিত করতে হবে, পরিবারকে সুরক্ষা করতে হবে। এ জন্যই বাইরের লোকের সঙ্গে না মেশা, জনসমাগম যেখানে, সেখানে না যাওয়ার মাধ্যমে নিজেকে সুরক্ষিত করার পাশাপাশি অন্যকেও সুরক্ষিত করতে হবে। সেই দায়িত্ব সবাইকে পালন করতে হবে। যদিও খেটে খাওয়া দিন-মজুর শ্রেণির এবং ছোট ব্যবসায়ীদের কষ্ট হচ্ছে,তাদের জন্য সময়টা খুব দুঃসময়, সেটা আমি বুঝতে পারি। করোনার অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশকে আমরা সুরক্ষিত রাখতে চাই। সে জন্য আমাদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং খাদ্যের নিরাপত্তাটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা বিশেষভাবে জোর দিচ্ছি, যাতে মানুষ কষ্ট না পায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আপনার নেযা উপরেল্লেখিত কর্মসুচি ও আপনার বক্তব্য হয়তো এটি গোষ্ঠী ভালোভাবে নিতে পারেনি বা নিবেও না। ১৬ কোটি মানুষের মাঝে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক ব্যক্তি তা মেনে না নিলেও তাতে কিছু যায় আসেনা বলে মনে করে দেশের খেটে খাওয়া জনসাধারণ সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। আপনার প্রবল সাহস , আত্ববিশ্বাস, দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা ,সময়োপযোগি পদক্ষেপ ও সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হতে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অতি নগণ্য তাতে কোন সন্দেহ নেই। এজন্য পরম সৃষ্টিকর্তার কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় বিশেষ করে সেনাবাহিনী, পুলিশ , র‌্যাব, চিকিৎসক, নার্স, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সমাজসেবক, সাংবাদিক মানবাধিকারকর্মী, কবি সাহিত্যিক,সংস্কৃতিকর্মীসহ যেসকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারাও প্রশংসার দাবি রাখে। তাদের সকলকে জাতীয় পরিবেশ মানবাধিকার সোসাইটি ( জাপমাস) এর পক্ষ থেকে তথা দেশের সকল মানবাধিকার সংগঠন, সকল কবি সাহিত্যিকদের সংগঠন, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, সংস্কৃতিকর্মীদেও পক্ষ থেকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা ও তাদেরর সুস্বাস্থ্যাকামনা করছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, আপনি জানেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করে রাজনীতি। আর এর পেছনে থাকে সংস্কৃতি। সংস্কৃতি হলো রাষ্ট্র ও জাতির অসাধারণ সম্পদ। এর চর্চা না হলে ছেলেমেয়েরা বিপথগামী হবে, এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। প্রশ্ন উঠতে পারে, এ অবস্থাায় সরকার কী করতে পারে? সংস্কৃতি কোন আরোপিত বিষয় নয়। ভাষা ও সংস্কৃতি সব সময় গতিশীল, তাই এর রূপান্তর পরিবর্তন, উত্তরণ ঘটবেই এবং তাতে গ্রহণ-বর্জনের প্রশ্ন ওতপ্রোতভাবে যুক্ত থাকবেই। সরকারের কাছে কাম্য হলো সুস্থা সংস্কৃতির ধারা বহমান রাখা এবং তার অনুকূলে ভূমিকা পালন। সুস্থা প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচিত হবে সমাজকে আরও জায়গা দেয়া, সৃষ্টিশীল মানুষদের স্বাধীনতার পরিসর বাড়তে দেয়া এবং শিক্ষাকে স্বদেশ ও সংস্কৃতি চর্চার সমন্বয়ে প্রাণবন্ত মানবিক ও গভীরতায় সমৃদ্ধ হতে দেয়া। সুস্থা সংস্কৃতি চর্চা না থাকা এবং খেলাধুলার সুযোগ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তরুণরা সামাজিক-সম্প্রীতি থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি জানেন যে, সংস্কৃতি যত ছড়াবে মানুষের মন তত আলোকিত হবে। শক্তিশালী সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক চর্চাই সমাজ থেকে জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মীয় রাজনীতির মতো অপশক্তিগুলোকে রুখে দিতে পারে। এ দেশেই সেটা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। সব অপশক্তিকে প্রতিহত করার অন্যতম উপায় হলো সুস্থা সাংস্কৃতিক চর্চা। সংস্কৃতি মানুষকে হতাশা থেকে বাঁচায়। সুস্থা সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে আলোকিত মানুষ হওয়া যায়। খোলামেলা পরিবেশে গ্রহণ-বর্জনের মাধ্যমে সংস্কৃতির সুস্থাধারা বহমান থাকলে সমাজ সুস্থা থাকবে।
ভাষা আন্দোলন, আইয়ুববিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময়, নব্বইয়ে স্বৈরশাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে, ২০০৮এ সামরিক শাসণামলে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে যে লড়াই করা হয়েছে, তাতে কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীদের ভূমিকা উল্লেখ করার মতো।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অর্থনৈতিক অভিঘাত মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। যা সর্বস্থারের মানুষ প্রণোদনা পাবে বলে জানিয়েছেন। আমার এ লেখায় কোন কিছু দাবি করা যৌক্তিক হবে কিনা জানিনা। তারপরও সবিনয়ে নিবেদন করতে চাই, করোনাভাইরাসের কারণে অনেক কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক , মানবাধিকারকর্মী, সংস্কৃতিকর্মীবৃন্দ অতিকষ্টে দিনযাপন করছেন। অসহায়, দিনমজুরের মতো তারা কারো কাছে কিছু চাইতে পারেন না , হাত পাততে পারেন না, লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিবেন তাও পারছেন না। তাই দেশের ৬৪ টি জেলা , ৫ শতাধিক থানা পর্যায়ে বসবাসরত (বিভাগীয় শহরসহ) কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক , মানবাধিকারকর্মী, সংস্কৃতিকর্মীদেরকে ২ হাজার ৫ শত কোটি টাকার (আগামী তিন অর্থ বছর পর্যন্ত ) প্রণোদনা ঘোষণা করার জন্য সবিনয় নিবেদন করছি। এবং কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক , মানবাধিকারকর্মী, সংস্কৃতিকর্মীদের বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল ও গ্যাস বিল ব্যতীত তিন মাসের বাসাভাড়া মওকুফ করার ব্যবস্থাা গ্রহণে প্রজ্ঞাপন জারি করার জন্য একজন নাগরিক হিসেবে সবিনয়ে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

পাশাপাশি, অনেক চাকরিজীবী নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবার বা লোকজন আছেন যারা অনেবক কষ্টে দিন যাপন করছেন। তাদেরকে সহজে কেউ সহযোগিতা করেন না, ক্ষুদ্র ঋৃণও কোন এনজিও দিতে চান না। তাদের আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশী। সারা মাস পরিবার পরিজনের খাবার, পোষাক, সন্তানদের বিভিন্ন খরচ চালিয়ে বাসা ভাড়া দিতে হিমশিম খেতে হয়্। বাড়ির মালিকদের সঠিক সময়ে ভাড়া না দিতে পারলে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়। বাংলাদেশে যারা চাকরিজীবী নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত লোকজন আছেন তাদের জন্য করোনার এ সংকটময় সময়ে তাদেরকেও অন্তত বিদ্যুৎ বিল ও গ্যাস বিল ব্যতীত তিন মাসের বাসাভাড়া মওকুফ করার ব্যবস্থাা গ্রহণ করা অতীব জরুরি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পড়ে জানতে পারলাম, গতকাল বিকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিাত দলীয় নেতাদের সঙ্গে আপনি দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই মতবিনিময়কালে আপনি করোনাসংকট মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং বিভিন্ন সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করেন। আপনার সাংগঠনিক নির্দেশনাগুলো এখানে উল্লেখ করা হলো-

এক. সারা দেশে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে ত্রাণ কমিটি গঠন করতে হবে। সব সাংগঠনিক উপজেলা শাখার নেতাদের অতিদ্রুতই ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ত্রাণ কমিটি প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক জেলা শাখায় জমা দিতে হবে। এই ত্রাণ কমিটি ওয়ার্ড পর্যায়ে দল-মত নির্বিশেষে প্রকৃত দরিদ্র, দুস্থা ও অসহায় মানুষের তালিকা প্রস্তুত করবে। ওই তালিকা স্থাানীয় প্রশাসনকে প্রদান করে সঠিক তালিকা প্রণয়নে সহায়তা ও সমন্বয় করবে। একই সঙ্গে এই কমিটি মানুষের মানবিক সংকটে সার্বিক সহযোগিতা এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে স্থাানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে। স্বাস্থ্যাবিধি মেনে ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিতে সহযোগিতা করবে।

দুই. বর্তমানে ৫০ লাখ হতদরিদ্র, দুস্থা, অসহায় ও কর্মহীন খেটে খাওয়া মানুষকে সরকারিভাবে রেশন কার্ডের আওতাভুক্ত করা হয়েছে এবং করোনাভাইরাসে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় আরও ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ডের অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি দল-মত নির্বিশেষে সমাজের হতদরিদ্র, দুস্থা, অসহায় ও কর্মহীন খেটে খাওয়া মানুষ যাতে অন্তর্ভুক্ত হয় সে ব্যাপারে স্থাানীয় প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করবে।

তিন. আওয়ামী লীগের এই ত্রাণ কমিটি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যথাযথ সরকারি নির্দেশনা পালন, সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যাবিধি মেনে চলার জন্য জনগণকে সচেতন করবে এবং মানবিক সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়াবে। পাশাপাশি স্থাানীয় আওয়ামী লীগের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, উপরেল্লেখিত আপনার সাংগঠনিক নির্দেশনাগুলোর দুই নম্বর অধ্যায়ে অর্থাৎ বর্তমানে ৫০ লাখ হতদরিদ্র, দুস্থা, অসহায় ও কর্মহীন খেটে খাওয়া মানুষকে সরকারিভাবে রেশন কার্ডের আওতাভুক্ত করা হয়েছে এবং করোনাভাইরাসে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় আরও ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ডের অন্তর্ভুক্তির যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তার পুরো দায়িত্ব দয়া করে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ বা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাার কাছে অর্পণ করুন। ২) নভেল করোনা ভাইরাসের মহামারীর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেসমস্ত শ্রমিক বেতনের দাবিতে রাজধানীর আশুলিয়া, উত্তরা, বাড্ডা, ভাটারা, মিরপুর, ভাষানটেক, শাহআলি, তেজগাঁও, মতিঝিল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা শতশত শ্রমিক বিক্ষোভ করছে তাদের বেতন দেয়ার কঠোর হুশিয়ারি প্রদান করে অবিলম্বে বেতন দেয়ার ব্যবস্থাা গ্রহণ করুন। ৩) যেসকল জনপ্রতিনিধি , দলীয় নেতাকর্মী বা অন্য ব্যক্তি ত্রাণের চাল চুরি করছে বা আত্বসাৎ করছে তাদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থাা নিশ্চিত করুন। ৪) যেসকল জনপ্রতিনিধি ত্রাণের চাল চুরি করছে বা আত্বসাৎ করছে তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত না করে চূড়ান্ত বহিস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ প্রদান করুন। ৫) যারা সরকারি নির্দেশনা না মেনে বাহিরে ঘুরাফেরা করছে তাদেরকে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে শাস্তির ব্যবস্থাা করুন। ৬) প্রয়োজনে সরকারি সাধারণ ছুটি বৃদ্ধি করুন। ৭) সরকারিভাবে যে সমস্ত ব্যক্তিদেরকে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তারা সঠিক পরিমাপে ত্রাণ পাচ্ছে কিনা তার জন্য মনাটরিং সেল গঠন করা সময়ের দাবি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, ১৩ এপ্রিল সোমবার রাতে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া আপনার দেয়া মহামূল্যবান ভাষণের একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করে এবং আপনার সুস্বাস্থ্যা ও দীর্ঘায়ু তথা আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মঙ্গল, সুস্বাস্থ্যা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে শেষ করছি।

‘করোনাভাইরাসের যে গভীর আঁধার আমাদের বিশ্বকে গ্রাস করেছে, সে আঁধার ভেদ করে বেরিয়ে আসতে হবে নতুন দিনের সূর্যালোকে। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায় তাই বলতে চাই: মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়/আড়ালে তার সূর্য হাসে/হারা শশীর হারা হাসি/অন্ধকারেই ফিরে আসে।’
জয় হোক মানবতার, জয় হোক মানুষের, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। ###

(লেখক : মানবাধিকারকর্মী, কবি, সাংবাদিক )

আতিক আজিজ
সম্পাদক: কাঁচামাটি
চেয়ারম্যান: জাতীয় পরিবেশ মানবাধিকার সোসাইটি (গভ:রেজি:নং-এস-৮৯১৩)
সহসভাপতি : বঙ্গবন্ধু লেখব পরিষদ
প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সমন্বয়ক : কবিসংসদ বাংলাদেশ (আহবায়ক কমিটি)
সহসভাপতি : স্মৃতি’৭১
মোবাইল: ০১৭১২ ৩৮৪২৬৫ আজিজের

Posted on April 16, 2020, in জাতীয়, মানবাধিকার, মুক্তমত. Bookmark the permalink. Leave a comment.

Leave a comment